আজঃ বুধবার ১২-০৩-২০২৫ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

কুমিল্লার দেবিদ্বারে পরকীয়া প্রেমিককে বিয়ের চাপ দেওয়ায় গৃহবধূ খুন

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: মঙ্গলবার ১১ Mar ২০২৫
  • / পঠিত : ৪ বার

কুমিল্লার দেবিদ্বারে পরকীয়া প্রেমিককে বিয়ের চাপ দেওয়ায় গৃহবধূ খুন

: কুমিল্লার দেবিদ্বারে পরকীয়ার জেরেই গৃহবধূ শাহনাজ বেগমকে খুন করা হয়। মাথায় রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার পর শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। পরে দুই ঘণ্টা লাশ নিয়ে ঘুরাঘুরির পর মহাসড়কের কালভার্টের নিচে ফেলে দেওয়া হয়। 

সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে ঘাতক মহিউদ্দিন কুমিল্লার আদালতে এসব স্বীকারোক্তি দেন। রাতে দেবিদ্বার থানার ওসি শামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার উপজেলা ইউসুফপুর এলাকার একটি কালভার্টের নিচ থেকে হাত, পা, মুখ ও চোখ বাঁধা অবস্থায় শাহনাজের লাশ উদ্ধার হয়। প্রথমে পরিচয় পাওয়া না গেলেও পরে জানা যায়, ওই নারী পাশের মুরাদনগর উপজেলার বাখরনগর এলাকার শাহ আলমের স্ত্রী। এরই মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, শাহনাজের সঙ্গে মহিউদ্দিন (৩৫) নামের এক বাসচালকের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরকীয়া সম্পর্কের জেরে বিয়ের জন্য চাপ দেন ওই নারী। এতে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই নারীকে মাথায় রড দিয়ে আঘাতের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেন মহিউদ্দিন। নিহত ওই নারী বিবাহিতা। স্বামীসহ তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাবার বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী। তাদের চার ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। অভিযুক্ত মহিউদ্দিনের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার গুঞ্জর গ্রামে। তিনি কুমিল্লা–কোম্পানীগঞ্জ সড়কে চলাচলকারী ফারজানা পরিবহনের চালক।

দেবিদ্বার থানা–পুলিশ সূত্র জানায়, নিহত নারীর সঙ্গে বাসচালক মহিউদ্দিনের দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। সম্প্রতি ওই নারী মহিউদ্দিনকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। চলতি সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে না করলে মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। ৫ মার্চ রাতে ওই নারীকে মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারে ডেকে আনেন মহিউদ্দিন। পরে তাকে নিজের চালানো ফারজানা পরিবহনের বাসে তোলেন মহিউদ্দিন। বাসের ভেতরেই বিয়ে নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয় তাদের মধ্যে। এরপর ওই দিন রাত সাড়ে ১০টায় কুমিল্লা–সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের গোপালনগর গ্যাস ফিল্ড–সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে গাড়িতে থাকা লোহার রড দিয়ে ওই নারীর মাথায় আঘাত করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে পরনের শাড়ি দিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে লাশ কুমিল্লা–সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবিদ্বার উপজেলার ইউছুফপুর সেতুর নিচে ফেলে চলে যান ওই ঘাতক।

তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রোববার বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ বাজার এলাকায় একটি বাসে তাস খেলা অবস্থায় মহিউদ্দিনকে আটক করে দেবিদ্বার থানা পুলিশ। পরে তার কাছ থেকে নিহত নারীর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি জব্দ করা হয়।

এদিকে, হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৬ মার্চ রক্তমাখা বাসটি ধুয়ে পরিষ্কার করে হত্যার আলামত নষ্ট করেন ঘাতক। এ কাজে সহযোগিতা করেন তার সহকারী আবদুস সাত্তার। চালকের সহকারী আবদুস সাত্তারকে কোম্পানীগঞ্জ এলাকা থেকে রোববার সন্ধ্যায় র্যা ব–১১ কুমিল্লার একটি দল আটক করে। পরে তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, আমরা ৬ মার্চ ইউছুফপুর এলাকা থেকে হাত–পা বাঁধা অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করি। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ছবি দেখে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় ৭ মার্চ ওই নারীর বড় ছেলে বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ছিল ক্লুলেস। পরবর্তী সময়ে তদন্তের মাধ্যমে মূল আসামি ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

ওসি বলেন, দুই আসামির মধ্যে মহিউদ্দিন কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba