আজঃ বৃহস্পতিবার ১৩-০৩-২০২৫ ইং || খ্রিষ্টাব্দ

গাজা-লেবানন থেকে লুট করা জিনিসপত্র বিক্রি করছে ইসরায়েলি সেনারা

Posted By Shuvo
  • আপডেটেড: শুক্রবার ০৭ Mar ২০২৫
  • / পঠিত : ৯ বার

গাজা-লেবানন থেকে লুট করা জিনিসপত্র বিক্রি করছে ইসরায়েলি সেনারা

এসবিনিউজবিডি ডেস্ক: ইসরায়েলি সৈন্যরা ফিলিস্তিনের গাজা এবং লেবাননের বিভিন্ন বাড়ি থেকে চুরি করা মূল্যবান জিনিসপত্র বিক্রির জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে। হিব্রু ভাষার সংবাদপত্র হামাকোম হাচিম বেগেহিনম (নরকের সবচেয়ে উষ্ণ স্থান)-এর এক অনুসন্ধানে এমনটা উঠে এসেছে।

তুর্কিভিত্তিক টিআরটি গ্লোবাল জানিয়েছে, ৪ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইসরায়েলি সৈন্য এবং কমান্ডারদের কিছু 'সাক্ষ্য' উদ্ধৃত করা হয়েছে। তারা অবরুদ্ধ গাজায় লুটপাট প্রত্যক্ষ করার বিশদ বিবরণ দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, তারা 'এত লুটপাট দেখেছেন যে, এটি তাদের আর অবাক করে না।'

হামাকোম হাচিম বেগেহিনম সংবাদপত্রের মতে, চুরি করা জিনিসপত্রের মধ্যে রয়েছে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ এবং মূল্যবান গয়না। এছাড়া কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, আসবাবপত্র, পোশাক এবং প্রসাধনীও লুট করা হয়েছে। কেফিয়া, গালিচা এবং তসবিহ পুঁতি পর্যন্ত নিয়ে যায় ইসরায়েলি সৈন্যরা।

পরবর্তীতে তারা লুট করা জিনিসপত্র বিক্রির জন্য ফেসবুক মার্কেটপ্লেসসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। তবে বেশিরভাগ লেনদেন ব্যক্তিগত টেলিগ্রাম গ্রুপগুলোতে হয়, যেগুলো শুধুমাত্র আমন্ত্রণের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য। কঠোর যাচাই-বাছাইয়ের পর লোকেদের গ্রুপগুলোতে নেওয়া হয়। এগুলো সেইসব গ্রুপের মতো, যেখানে মাদক এবং অস্ত্র ব্যবসা করা হয়।

নাহাল ব্রিগেডের একজন সৈনিকের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্লাটুন কমান্ডার এবং আমি সৈন্যদের ব্যাগগুলো দেখতাম, তারা কী চুরি করেছে তা দেখার জন্য। সেখানে কেফিয়া, গালিচা - যা কিছু পারে প্রত্যেকেই কিছু না কিছু নিয়ে যেত।

আরেকজন ইসরায়েলি সৈনিক সংবাদপত্রটিকে বলেন, 'আমরা কেবল অস্ত্র খোঁজার জন্য অভিযানে নামতাম, আর লোকেরা উন্মত্তভাবে প্রার্থনার পুঁতি খুঁজছিল। তারা সেগুলো সংগ্রহ করত, তুলনা করত...। একজন লোক প্রার্থনার পুঁতি খুঁজে বের করার জন্য বাচ্চাদের ঘরও তছনচ করতো।'

প্রাথমিকভাবে চুরি যাওয়া জিনিসপত্রের জন্য সৈন্যদের ব্যাগ পরীক্ষা করার সিদ্ধান্তটি সৈনিক এবং তার প্লাটুন কমান্ডারের একটি স্বাধীন প্রচেষ্টা ছিল।

ইসরায়েলি সৈনিক বলছিলেন, সৈন্যদের খাদ্য ও অস্ত্র সরবরাহ বিতরণে নিযুক্ত কর্মকর্তারা গাজা থেকে চুরি হওয়া আসবাবপত্র এবং গৃহস্থালীর জিনিসপত্র নিজেদের ট্রাক দিয়ে সামরিক ইউনিটে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'তারা ট্রাক থেকে খাবার এবং গোলাবারুদ নামিয়ে সোফা এবং আসবাবপত্র লোড করত।'

সেনা সদস্য বলেন, লুটপাট এতটাই সাধারণ হয়ে উঠেছিল যে, 'একজন সিনিয়র কমান্ডারও গাজার মানুষের বাড়ি থেকে সরঞ্জাম লুট করছেন। ডেপুটি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার এবং ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের সম্পূর্ণ সজ্ঞানের সাথে এগুলো করেছেন।'

যখন তিনি তার ডেপুটি কমান্ডারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, তখন তাকে বলা হয়, 'যদিও এটি খারাপ দেখাচ্ছে, এটি সম্পর্কে তার কিছুই করার ছিল না।'

লুটপাট, লুণ্ঠন আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হয়। ইসরায়েলি আইনও লুটপাট নিষিদ্ধ করেছে। তবুও প্রায়শই তাদের সামরিক বিচার ব্যবস্থা সৈন্যদের জবাবদিহি করতে ব্যর্থ হয়।

২০১৭-২০২১ সময়কালের বিশ্লেষণের ফলাফলের ভিত্তিতে ২০২১ সালে একটি ইসরায়েলি নজরদারি সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যতগুলো তদন্ত করে, এর মাত্র এক শতাংশেরও কম মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। অসদাচরণের প্রচুর প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সেনাদের বিরুদ্ধে মামলা বিরল, একইভাবে সাজাও শিথিল করা হয়। বেশিরভাগ মামলায় কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে চুপচাপ সেগুলো ধামাচাপা দেওয়া হয়।

ট্যাগস :

শেয়ার নিউজ


নিউজ কমেন্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে লগইন করুন

© All rights reserved © "Daily SB NEWS"
Theme Developed BY Global Seba